আমাদের সমাজের অনেকেই সাহরি খাওয়ার সময় দেরি হয়ে গেলে মসজিদের আজান চলাকালীন সময়েও পানাহার করতে থাকেন। তারা মনে করেন ফজরের আজানের সময়ও সাহরি খাওয়া যায়। কেউ কেউ মনে করেন আজানের শেষ পর্যন্ত খাওয়া যায়। কাউকে দেখা যায় নিজ এলাকার মসজিদের আজান শেষ হয়ে অন্য মসজিদে যখন আজান চলতে থাকে তখনও খাওয়া চালিয়ে যান। তাদের ধারণা হয়ত যতক্ষণ কোনো না কোনো মসজিদের আজান শোনা যাবে ততক্ষণ খাওয়া যাবে।
এর প্রত্যেকটিই ভুল ধারনা। এমনই ভুল যা কিনা রোজাকে পুরোপুরো নষ্ট করে দিবে। এমন পরিস্থিতিতে রোজার কাজা আদায় করতে হবে।
সাহরির শেষ সময় আসলে ফজরের আজানের সাথে সম্পর্কিত নয়। বরং সুবহে সাদিকের সাথে সংশ্লিষ্ট। সাহরির সময় শেষ হয় সুবহে সাদিকের সময়ে। এরপর ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়। কিন্তু ফজরের আজান সুবহে সাদিক হওয়ার সাথে সাথে না দিয়ে কয়েক মিনিট পরেও দেয়া হতে পারে। আমাদের দেশে রমজান মাসে সুবহে সাদিকের সময়ের শুরুর পর অন্তত ৩ মিনিট পর মসজিদে ফজরের আজান হয়। তাই যারা ফজরের আজানের সময় পানাহার করতে থাকবেন তারা আসলে ফজরের ওয়াক্তের সময় পানাহার করছেন। তাই তাদের রোজা ভেঙে যাবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ আরও যেসকল প্রতিষ্ঠান রমজান মাসে সাহরি-ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেন, তারা সাধারণত সতর্কতামূলক সুবহে সাদিকের ৩ মিনিট আগে সাহরির শেষ সময় দেখিয়ে থাকেন এবং সুবহে সাদিকের ৩ মিনিট পর ফজরের আজানের সময় দেখিয়ে থাকেন। ফলে সাহরির শেষ সময় আর ফজরের আজানের সময়ের মধ্যে ৬ মিনিটের গ্যাপ থাকে। এ গ্যাপটা সতর্কতামূলক। তাই কেউ যদি ক্যালেন্ডার দেখে ফজরের আজানের সময় পর্যন্ত পানাহার করেন, তবুও তার রোজা ভেঙে যাবে।
তাই আমাদের উচিত, সতর্কতামূলক সাহরির যে শেষ সময় ক্যালেন্ডারে দেখানো হয়, তার আগেই সাহরি খাওয়া শেষ করা। হ্যাঁ, একান্তই কেউ যদি কোনোদিন কোনো বিপদে পড়ে যান, যেমন, একটু পানি খেতে হবে কিংবা কোনো ওষুধ খেতে হবে ইত্যাদি, তবে সাহরির (সতর্কতামূলক) সময় শেষ হওয়ার পরও এক-দেড় মিনিটে খেয়ে নেয়া যাবে। একান্ত সংকট না হলে এ থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য ও দলীলগুলো পাওয়া যাবে উৎস লিংকেঃ