নামাজের শুরুতে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত “পড়া”

আফনান
কর্তৃক আফনান 420 বার দেখা হয়েছে মন্তব্য করুন

নিয়ত অর্থ সংকল্প, অন্তরের ইচ্ছা। নামাজের শুরুতে নিয়ত করা ফরজ- এ নিয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। কথা হলো, নিয়ত কি মুখে উচ্চারণ করেই করতে হবে, না মনে মনে করলেও চলবে? মুখে উচ্চারণ করে করতে হলে, তা আরবীতে, না বাংলায়?

এ প্রশ্নের উত্তরে বলব, নামাজের শুরুতে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা মোটেও জরুরি নয়। নামাজ সহীহ হওয়ার জন্যে নিয়ত তো লাগবেই। কিন্তু সেটা মনে মনে থাকলেই হবে, মুখে উচ্চারণ করতে হবে না। আপনি কোন নামাজ পড়ছেন, তা ফরজ না নফল- এসব ঠিক করে নিন। এটাই নিয়ত।

হ্যাঁ, যদি কেউ মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করে তবে তাতেও দোষের কিছু নেই। তবে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করাকে জরুরি মনে করা, কিংবা অধিক সওয়াবের বিষয় মনে করা ঠিক নয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম কখনো মুখে উচ্চারণ করে নামাজের নিয়ত করেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না।

অন্তরের নিয়তটাই আসল নিয়ত। তাই কেউ জোহরের নামাজ পড়তে এল। মনে মনে সে নিয়ত করেছে- সে জোহরের ফরজ নামাজ আদায় করছে। কিন্তু যদি ভুলবশত মুখে অন্য কোনো নামাজের নিয়ত সে করে, তবুও তার জোহরের নামাজই আদায় হবে। অন্তরের নিয়তটাই গ্রহণযোগ্য হবে, ভুলবশত মুখে যা উচ্চারণ করেছে তা বিবেচ্য নয়।

আর মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করাই যেহেতু জরুরি নয়, তাই তা কোন ভাষায় করতে হবে সে প্রশ্নও তেমন অর্থবোধক কিছু নয়। আরবি-বাংলা-ইংরেজি যে কোনো ভাষাতেই নিয়ত করা যেতে পারে। আরবিতে নামাজের নিয়ত করার বিশেষ কোনো ফজিলত নেই। আসল তো অন্তরের নিয়তই।

নিয়ত কখন করতে হবে- এটাও এক প্রশ্ন। তাকবীরে তাহরীমার আগেই নিয়ত করতে হবে। তবে কেউ যখন নির্দিষ্ট কোনো নামাজের নিয়ত করে মসজিদের উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হন কিংবা ওজু করেন। এরপর নামাজ ভেঙে যায় এমন কোনো কাজ না করেন, যেমন কারও সাথে কথা বলা ইত্যাদি। তবে তার এ নিয়তই যথেষ্ট হবে। কিন্তু যদি নামাজ ভেঙে যায় এমন কোনো কাজ তিনি করেন, তবে আবারও নতুন করে নিয়ত করতে হবে।

নামাজের নিয়ত করতে হবে- কোন নামাজ পড়ছি, তা ফরজ না নফল বা সুন্নত- এসব বিষয়। ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে ইমামের ইক্তিদার নিয়তও করতে হবে।

তবে অনেককে দেখা যায়, মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করতে গিয়ে তাদের রাকাত ছুটে যাচ্ছে। নিঃসন্দেহে এটা অনুচিত, বর্জনীয়। যদি সময় থাকে, তবে চাইলে আমরা মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করতে পারি। কিন্তু তাই বলে ইমাম সাহেব যখন রুকুতে চলে যান আর মুখে ‍উচ্চারণ করে নিয়ত করার কারণে রাকাত ছুটে যাচ্ছে, তখনো আরবিতে বা বাংলায় নিয়ত উচ্চারণ করে করতেই হবে- এটা ঠিক নয়।

Share This Article
মন্তব্য করুন

Leave a Reply